মাসুদ রানা, কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি: চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চার বছর ধরে অযত্নে পড়ে আছে একটি আধুনিক লাইফ সাপোর্ট অ্যাম্বুলেন্স। করোনা মহামারির সময় ভারতের পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে দেওয়া অ্যাম্বুলেন্সটি একদিনের জন্যও ব্যবহার করা হয়নি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি পরিণত হচ্ছে পরিত্যক্ত একটি যানবাহনে। ইতোমধ্যে গাড়িটির সামনের গ্লাসও ভেঙে গেছে।
২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তি উপলক্ষে ভারত সরকার ১০৮টি লাইফ সাপোর্ট অ্যাম্বুলেন্স উপহার দেয়। স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নের লক্ষ্যে এ উদ্যোগ নেওয়া হলেও অধিকাংশ অ্যাম্বুলেন্স জেলা সদর হাসপাতালেই সীমাবদ্ধ থেকে যায়। উপজেলায় দেওয়া হয় অল্প সংখ্যক। স্বাস্থ্য সেবায় গুরুত্বের কথা চিন্তা করে তৎকালীন চান্দিনার সংসদ সদস্যের তদবিরে একটি অ্যাম্বুলেন্স চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এলেও তা আর সচল হয়নি। হাসপাতাল সূত্র জানায়, অ্যাম্বুলেন্সটি অভিজ্ঞ চিকিৎসক, প্রশিক্ষিত নার্স, চালক ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবেই পড়ে রয়েছে অচল অবস্থায়। নেই পর্যাপ্ত জ্বালানি বা প্রয়োজনীয় ব্যয় বরাদ্দ। ফলে প্রায় কোটি টাকার আধুনিক যানটি সেবার বাইরে থেকে গেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, যখন রোগীকে জরুরি অবস্থায় জেলা সদরে বা অন্যত্র নিতে হয়, তখন এই অ্যাম্বুলেন্সের কথা মনে পড়ে। অথচ চোখের সামনে থাকা এই যানটি কাজে না লাগিয়ে পড়ে থাকতে দেওয়া মানে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা।
চিকিৎসকদের মতে, এমন লাইফ সাপোর্ট অ্যাম্বুলেন্স সাধারণ পরিবহনের চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি চলমান অবস্থায় রোগীকে অক্সিজেন, ভেন্টিলেশনসহ জরুরি চিকিৎসা সেবা দিতে সক্ষম। অথচ এই গুরুত্বপূর্ণ সম্পদটি ৪ বছর ধরে পড়ে রয়েছে হাসপাতালের এক পাশে অযত্নে, অবহেলা আর ব্যবস্থাপনার ব্যর্থতার করুণ চিত্র নিয়ে। স্বাস্থ্যসেবা খাতে এমন ‘উপহারের অপচয়’ নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে স্থানীয়দের মধ্যে।
চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপ্লেক্সে সেবা নিতে আসা রোগীর স্বজন বিল্লাল হোসেন জানান, এমন অ্যাম্বুলেন্স জেলা সদরেও কম আছে। চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি মহাসড়কের পাশে। এখনে প্রতিনিয়ত গুরুতর অনেক অসুস্থ রোগী আসে। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে প্রায়ই সংকট দেখা দেয়। এখানে এমন আধুনিক অ্যাম্বুলেন্স থাকতেও তা ব্যবহার করা যাচ্ছে না এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।