মাসুদ রানা,কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি: কুমিল্লার গোমতী নদীর বিস্তীর্ণ বালুচর এখন সবুজের সমারোহে ছেয়ে গেছে। অল্প পুঁজি এবং কম পরিশ্রমে বেশি লাভ হওয়ায় এখানকার কৃষকরা এখন (প্রচলিত) সবজির পাশাপাশি লাউ শাক চাষের দিকে ব্যাপকভাবে ঝুঁকছেন। লাউয়ের চেয়ে শাকের চাহিদা ও দাম বাজারে বেশি হওয়ায় শতাধিক কৃষক এই নতুন ধারার চাষাবাদে নিজেদের ভাগ্য বদলাচ্ছেন।বুড়িচং উপজেলার ভান্তী গ্রামের কৃষক মিজানুর রহমান জানান, আগে তিনি চরে লাউ চাষ করতেন, কিন্তু অতিবৃষ্টি ও পোকার আক্রমণে প্রায়ই লোকসান গুনতে হতো। পরে তিনি লাউয়ের পরিবর্তে শুধু লাউ শাক চাষ শুরু করেন। তিনি বলেন, “লাউয়ের তুলনায় লাউ শাকে ঝুঁকি ও খরচ দুটোই কম, কিন্তু লাভ অনেক বেশি। লাউ চাষে মাচা তৈরির খরচ নেই, পোকামাকড়ও কম লাগে।”তিনি জানান, একটি গাছ থেকে ৪-৫ বার পর্যন্ত শাকের ডগা কাটা যায় এবং প্রতি ১০-১২ দিন পরপরই ফসল তোলা যায়। ছয়-সাতটি ডগা দিয়ে তৈরি একটি আঁটি বাজারে ২৫ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে প্রতি কানি (১২০ শতক) জমিতে ৩০-৪০ হাজার টাকা খরচ করে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভ করা সম্ভব।তার এই সাফল্য দেখে কামারখাড়া গ্রামের কৃষক আবদুস সাত্তারসহ আরও অনেকেই এখন লাউ শাক চাষ শুরু করেছেন।
তাদের উৎপাদিত এই শাক কুমিল্লার নিমসার পাইকারি বাজার হয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলে যাচ্ছে।কুমিল্লা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, “আমি সম্প্রতি গোমতীর চর পরিদর্শন করেছি। কৃষকরা লাউয়ের পরিবর্তে এখন লাউ শাক চাষে আগ্রহী হচ্ছেন, যা অত্যন্ত ইতিবাচক। এতে অল্প সময়ে বেশি লাভ পাওয়া যায় এবং বাজারের সবজির চাহিদাও পূরণ হচ্ছে।”