বিশেষ প্রতিনিধি: বাবা ডাবলু শেখ গ্রামের সাধারণ কৃষক,তা-ও অসুস্থ। করতে পারেন না কোন কাজ। সংসার চালানোয় যেন সাত সমুদ্র পাড়ি দেওয়ার সমান। সেখানে ছেলে নিশানকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করানো যেন ‘বামুন হয়ে চাঁদে হাত দেবার মত’ ঘটনা। হাজার চেষ্টা করেও মেধাবী ছেলেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির টাকা জোগাড় করতে পারেননি তিনি৷ আশাও ছেড়ে দিয়েছিলেন। তবে এমন কঠিন সময়ে দূত হিসেবে তার পাশে দাঁড়িয়েছেন রিহান হোসেন(রায়হান) নামের এক যুবক। নিশানকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সমস্ত অর্থ বহন করেছেন তিনি। তাতে হাসি ফুটেছে হতদরিদ্র এ পরিবারে৷ প্রসংসায় ভাসছেন নিশানের পাশে দাঁড়ানো যুবক রিহান হোসেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে নিয়ে অনেকেই পোস্ট করছেন। বাহবা দিচ্ছেন এমন মহৎ উদ্যোগকে। ঘটনাটি ঝিনাইদহের শৈলকুপার। মেধাবী শিক্ষার্থী নিশান উপজেলার মধুপুর গ্রামের ডাবলু শেখের ছেলে। অন্যদিকে রিহান হোসেন বগুড়া ইউনিয়নের রত্নাট গ্রামের আব্দুল হাই মন্ডলের ছেলে। সে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ ঝিনাইদহ জেলার শাখার সাধারণ সম্পাদক।
জানা যায়,আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারছিল না মেধাবী শিক্ষার্থী নিশান আলী। বাবা ডাবলু শেখ অনেক চেষ্টা করেও ছেলের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির টাকা জোগাড় করতে পারেননি। পরে বিষয়টি জানতে পেরে নিশান আলীকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সমস্ত ব্যয়ভার গ্রহণ করেন রিহান হোসেন(রায়হান)। শুক্রবার সেই অর্থ বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের সরকারি কেশব চন্দ্র কলেজ শাখার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে নিশানের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের সরকারি কেশব চন্দ্র কলেজ শাখার সদস্য সচিব মোঃ নাইমুন আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন’,আমরা গর্বিত যে রিহান হোসেনের মতো মানবিক মানুষ আমাদের সংগঠনে আছে। তার এই অনন্য উদ্যোগের ফলে এক অসহায় শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ আবার আলোর মুখ দেখেছে। এ ধরনের মানবিক উদ্যোগ সমাজে নতুন আশা জাগিয়ে তোলে। মোঃ রিহান হোসেনের এমন সহানুভূতিশীল কার্যক্রম নিঃসন্দেহে অন্যদের জন্যও অনুকরণীয় হয়ে থাকবে।’
বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ ঝিনাইদহ জেলার শাখার সাধারণ সম্পাদক রিহান হোসেন (রায়হান) বলেন,শুধুমাত্র টাকার অভাবে একটি ছেলের জীবন নষ্ট হয়ে যাবে এটা মানতে পারিনি। ঘটনাটি শোনামাত্রই পরিবারটির সাথে যোগাযোগ করে ভর্তির টাকা শিক্ষার্থী নিশানের হাতে তুলে দিয়েছি। আশপাশে খোঁজ করলেই এমন ঘটনা অহরহ জানা যায়। তাই সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে সকলে মিলে এমন মানবিক কাজে এগিয়ে এলে কোন শিক্ষার্থী আর টাকার অভাবে পড়ালেখা থেকে বঞ্চিত হবে না।