ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ছাত্র ও স্যার এ এফ রহমান হল ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক শাহরিয়ার আলম সাম্যকে বুধবার (১৪ মে) রাত সাড়ে ১০টায় নিজ গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জের বেলকুচির সড়াতৈলে দাফন করা হয়েছে। এর আগে রাত ১০টায় জানাজা অনুষ্ঠিত হয় জান্নাতুল বাকী কবরস্থান সংলগ্ন হাফিজিয়া মাদরাসা মাঠে। যেখানে মানুষের ঢল নামে। মাঠের আনাচে-কানাচে মানুষে ভরে যায়।
জানাজা পড়ান সাম্যের আপন মামা মাওলানা জাহিদুল ইসলাম। এতে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস, সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন, সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মির্জা মোস্তফা জামান, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি জুনায়েদ হোসেন সবুজ ও সাধারণ সম্পাদক সেরাজুল ইসলাম সেরাজসহ পরিবারের সদস্যবৃন্দ।
ঢাকা থেকে সাম্যের প্রায় ৫০-৬০ জন বন্ধু তার মরদেহের সঙ্গে সিরাজগঞ্জে আসেন। উপস্থিত সবাই চোখের জলে প্রিয় বন্ধুকে বিদায় জানান। সাম্যের বন্ধু এস এম নাহিয়ার ইসলাম বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে সাম্য সম্মুখ সারিতে থেকে লড়াই করেছে। নতুন করে স্বাধীন হওয়া এই দেশের রাজপথেই তার রক্ত ঝরল, এটা মেনে নেওয়া যায় না।
জানাজার আগে বক্তব্য দেওয়ার সময় ছাত্রদল নেতারা সাম্যের হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন বলেন, সাম্যের এই নিষ্ঠুর হত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়বো না। ছাত্রদল এর বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেছে।
পরিবারের পক্ষে সাম্যের চাচা মো. মাহবুব বলেন, আমার ভাতিজাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা চাই সব সত্য দ্রুত প্রকাশ হোক।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (রাজশাহী বিভাগ) আমিরুল ইসলাম খান আলিম মুঠোফোনে বলেন, সাম্য আমাদের গণতন্ত্রের লড়াইয়ের সাহসী সৈনিক ছিল। তার মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। আমরা এই হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।
নিহতের বড় ভাই সর্দার আমিনুল ইসলাম বলেন, ঢাকা থেকে তার এতো বন্ধু এসেছে, আমি কল্পনাও করিনি। সবাই ওকে ভালোবাসতো, ওর জন্য দোয়া করবেন।
সিরাজগঞ্জের আকাশে তখনও বিষাদের ছায়া, আর গ্রামের বাতাসে বাজছিল সাম্যের জন্য একসাথে উচ্চারিত শত শত মানুষের দোয়া। ছোট বেলায় মা হারানো এই ছেলেটি প্রাচ্যের অক্সফোর্ডখ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তো। মায়ের ভালোবাসা না পেয়েও সফলতার ছোঁয়া পাওয়া এই যুবকের মৃত্যুর খবর কেউই মেনে নিতে পারছে না।